বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ঘূর্ণিঝড় রেমাল: ১৯ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত বাহুবল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাদ, সুন্দর ও দাঙ্গামুক্তভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাসার ছাদে আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু রেমাল পরিণত প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে, মহাবিপদ সংকেত বাহুবলে ৫ আওয়ামীলীগ নেতাকে হারিয়ে আলেম চেয়ারম্যান নির্বাচিত শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাস যোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পুলিশ বদ্ধপরিকর- এসপি আক্তার হোসেন জনগণ যাকে ভালবাসবে, দায়িত্ব দিতে চাইবে, তাকেই দেবে- জেলা প্রশাসক বাহুবলে বিয়ের আনন্দ-ফুর্তি চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবতীর মুত্যু বাহুবল উপজেলা নির্বাচন : ২০ প্রার্থীর মাঝে নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ বাহুবল উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

বাহুবলে শিশু সন্তানকে গলা টিপে হত্যার ঘটনায় ঘাতক পিতা গ্রেফতার

বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বাহুবলে এনামুল হক শাকিল (৭) নামে শিশু সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করার ঘটনায় ইমান আলী (৪৫) নামে ঘাতক পাষন্ড পিতাকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

ঘাতক ইমান আলী উপজেলার লস্করপুর গ্রামের মৃত নিনাই মিয়ার পুত্র ও নিহত শিশু এনামুল হক শাকিল স্থানীয় কোটান্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য দরবেশ আলী জানান, রোববার রাতের কোন এক সময় লস্করপুর রেলস্টেশনের পরিত্যক্ত সরকারি কলোনীর বাসা (শিশু হত্যার স্থান) থেকে বালিশ-বিছানা নিয়ে পাশ্ববর্তী ঘোষপাড়া গ্রামের অ্যাডভোকেট নাসির হোসেন এর পরিত্যক্ত তালাবদ্ধ একটি ঘরের টিনের ভেড়া কেটে ভিতরে প্রবেশ করে রাত্রী যাপন করে। সোমবার সকালে বাড়ির দায়িত্বরত কেয়ারটেকার জালাল মিয়া ঘরের তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। পরে ঘরের ভেড়ার ছিদ্র দিয়ে ভিতরে শিশু হত্যাকারী ঘাতক ইমান আলীকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পান। বিষয়টি স্থানীয় লোকদের জানালে ঘরের চতুর্দিক দিয়ে ঘেরাও করে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে খবর পেয়ে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘাতক পিতা ইমান আলীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান এর সাথে বারবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। তবে নিহত শিশুর মাতা নুরুন্নাহার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করার প্রস্ততি নিচ্ছেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

প্রসঙ্গতঃ দিনমজুর ইমান আলী বছর দশেক পূর্বে একই গ্রামের নূরুন্নাহারকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে সংসার শুরু করে রেলস্টেশনের পরিত্যক্ত সরকারি কলোনীতে বসবাস করে আসছেন। ইতোমধ্যে দাম্পত্য কলহের মধ্য দিয়েও তাদের পরিবারে ১ ছেলে ও ২ মেয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। প্রায়ই স্ত্রীর সাথে ঝগড়া-বিবাদ করে তাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন ইমান আলী। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার শালিশী বৈঠকও হয়। ঘটনার দিন শনিবার দিবাগত রাতেও স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে খাবার না খেয়ে সন্তানদের নিয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে ফন্দি করে সন্তানদের মেরে স্ত্রীকে ফাঁসানোর ফন্দি করে ইমান আলী। আনুমানিক রাত ১ টার দিকে শিশু সন্তান এনামুল হক শাকিল কে কৌশলে ঘুমন্ত অবস্থায় শীতের কম্বলের নিচে গলা টিপে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। পরে অপর শিশু সন্তান চাঁদনী (৫) কেও একইভাবে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা করে এবং বলতে থাকে তোর ভাইকে মেরেছি এখন তোকে মেরে তোর মাকে জেলের ভাত খাওয়াব। পিতার মুখ থেকে একথা শোনে সে শোর চিৎকার করতে থাকে। এসময় সন্তানের চিৎকার শুনে বিষয়টি অন্যরকম ভেবে পাশের রুম থেকে মা নুরুন্নাহার ছুটে এসে দরজায় লাথি দিয়ে ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে চাঁদনীকে উদ্ধার করে মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। এসময় ঘরের জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে ইমান আলী পালিয়ে যান। পরে এনামুল হক শাকিল খুঁজতে গিয়ে মা নুরুন্নাহার কম্বলের নিচে সন্তানের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
খবর পেয়ে রোববার সকালে বাহুবল মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আলমগীর হোসেন নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com